স্টাফ রিপোর্টার: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলাধীন সলঙ্গা থানার ঘুড়কা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বিএনপি'র কর্মী হওয়ায় বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র কর্তৃক নানাভাবে হয়রানিসহ মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পলায়ন করলেও আ'লীগের প্রেতাত্মা গোকুল চন্দ্র এখনও বিএনপির কর্মী ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে নানাভাবে হেনস্তা করছেন। অপরদিকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বৈষম্য দুর করা হলেও এখনো আ'লীগ ঘরোনার প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্রের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। এতে আজ দেশ আ'লীগ মুক্ত হলেও মুক্ত হয়নি ঘুড়কা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে এখনও ভর করে বসে আ'লীগের প্রেতাত্মা গোকুল চন্দ্র একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে বিএনপি'র এই কর্মীকে হয়রানি করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
জানাগেছে,২০১৫ সালে ঘুড়কা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের শুন্যপদের নিয়োগ পরীক্ষায় আনোয়ার হোসেন প্রথম স্থান অধিকার করার পরও শুধু মাত্র বিএনপি কর্মী হওয়ার কারণে আ'লীগ সমর্থিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র তাকে নিয়োগ দিতে তালবাহানা করেছিলেন। পরে বিষয়টি যখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল তখন প্রধান শিক্ষক তাকে যোগদান করাতে বাধ্য হন। কিন্তু আদালতের সুবাধে যোগদানের সুযোগ সৃষ্টি হলেও পরবর্তীতে আ'লীগ ঘরোনার এই প্রধান শিক্ষক তাকে বিভিন্ন অজুহাতে নির্যাতন করতে থাকেন। নির্যাতনের অংশ হিসেবে সরকারি অংশের বেতন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় ইচ্ছাকৃতভাবে কাগজপত্র কম পাঠিয়ে বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে বিলম্বিত করেছেন। সেসময় বিদ্যালয় কর্তৃক প্রদেয় বেতন ভাতা অন্যন্য শিক্ষক কর্মচারীদেরকে প্রদান করা হলেও এই শিক্ষকে কোনরুপ বেতন ভাতা দেওয়া হয়নি। এতে সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বেতন ভাতা না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আ'লীগ ঘরোনার প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র বলেন, সরকারী বেতন না আসা পর্যন্ত বিদ্যালয় থেকে কোন প্রকার টকা পয়সা দেওয়া হবেনা। এভাবে নাজেহালের প্রায় সাত মাস পর যখন আনোয়ার হোসেন সরকারি অংশের বেতন পান তখন থেকে তাকে বিদ্যালয় কর্তৃক প্রদেয় বেতন ভাতার অংশ প্রদান করেন। কিন্তু তাকে বকেয়া সাত মাসের বেতন আদ্যবধী পর্যন্ত প্রদান না করে বিভিন্নভাবে তালবাহানা করেন। এতে বাধ্য হয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন গত ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে প্রধান শিক্ষক বরাবর বেতন চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক কোন সমাধান না করে তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছেন। তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়,আ'লীগের প্রেতাত্মা প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র আওয়ামী লীগের অপশাসনের সময় ২০১৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে কটুক্তি করার মিথ্যা অভিযোগ এনে সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে হয়রানিও করেছেন। এমনকি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষে ভোট দিতে গিয়ে নির্বাচনী মামলায় আসামী করে তাকে হয়রানিও করেছেন তিনি। এছাড়াও আ'লীগ করার দাপটে প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাত করেছেন। এরমধ্যে ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যে প্রতিবেদন দাখিল করেন সে অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক প্রায় ৫৫ হাজার ৫ শত ৫১টাকা অনিয়ম করেছেন । ২০২২ সালের পর থেকে প্রধান শিক্ষক সাপ্তাহে তিন দিন কোন প্রকার নিয়মনীতি না মেনে কিডনি ডায়ালায়সিস করতে যান। এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনার এতো কিছু জানতে হবেনা। এদিকে ৫ আগষ্ট ২০২৪ এর পর সকল অনিয়মের কারণ প্রধান শিক্ষকের নিকট সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানতে চাইলে তিনি সুবিধাবাদি কিছু সংখ্যক শিক্ষক নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন বিদ্যালয়ের একমাত্র বিএনপি সমর্থিত এই শিক্ষকটির বিরুদ্ধে। সুতরাং আ'লীগ সমর্থিত প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বিএনপি কর্মী যে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল