শেখ আরিফ,বন্দর,নারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জের বন্দর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জোড়া খুনের ঘটনায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা রনি(৪৫) ও তার ছেলে রায়হান(৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৭জুন) দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদি খান থানার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বন্দর ২২নং ওয়ার্ডের হফেজীবাগ এলাকার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে বিএনপি নেতা মাসুদ রানা রনি(৪২) ও তার ছেলে রায়হান(২৬)।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, বন্দরে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে নিহত মেহেদী হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় আসামী তথ্য ও প্রযুক্তির সহযোগিতায় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদি খান থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ নিয়ে দুই হত্যা মামলায় ১৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তথ্যসুত্রে,গত ২১ জুন আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্বে একরাতে বন্দরে দু’জন ব্যক্তি প্রাণ হারান। নিহতরা হলেন- হাফেজীবাগ এলাকার প্রয়াত সাদেক আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৭০) এবং পাশের শাহী মসজিদ এলাকার প্রয়াত আব্দুল জলিল মুন্সির ছেলে মেহেদী হাসান (৪২)।
কুদ্দুস পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং মেহেদী বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
এ ঘটনায় ২৩ জুন বন্দর থানায় পৃথক দু’টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই কাউন্সিলরকেও আসামি করা হয়েছে।
দিনমজুর আব্দুল কুদ্দুস (৬০) নিহতের ঘটনায় তার মেয়ে রোকসানা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলাটি করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহ। তার ভাই বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান (৪২) হত্যার অভিযোগে মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহীন মিয়াকে।
দুটি মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বন্দর রেললাইন, হাফেজীবাগ ও সালেহনগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার ও বাবু শিকদারের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার পক্ষের জাফর-রনিদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল।
এর জেরে শুক্রবার বন্দর রেললাইন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে পরদিন শনিবার রাতে মেহেদী ও কুদ্দুস খুন হন বলে উভয়ের মামলায় বলা হয়েছে।
দুটি মামলাতেই সাবেক দুই কাউন্সিলরকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। মামলা দুটিতে সাবেক আরেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার পক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ড দুটি সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ থাকলেও আসামি তালিকায় তার নাম নেই।