স্টাফ রিপোর্টার: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জর লক্ষীবিষ্ণ প্রসাদ গ্রামে বিগত আ’লীগ সরকারের শাসনামলে আ’লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা বিএনপির কর্মী সানোয়ার হোসেনের বসতবাড়ীতে সংগঠিত অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরেরকৃত মামলা পক্ষপাতিত্ব করে রায়গঞ্জ থানার ওসি আসাদুজ্জামান কর্তৃক ফাইনাল ও মামলার বাদীকে হয়রানির প্রতিবাদ ও মামলার অপহৃতা স্বাক্ষী শিল্পী খাতুনকে উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ শহরস্থ দৈনিক কলম সৈনিক পত্রিকা অফিসের সাংবাদিক মহির উদ্দিন স্মৃতি হল রুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী রায়গঞ্জ উপজেলার লক্ষীবিষ্ণ প্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা,মামলার বাদী ও বিএনপির নির্যাতিত কর্মী ছানোয়ার হোসেন। এসময় তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,আমি ২০১৯ সাল থেকে স্বপরিবারে গাজীপুরে বসবাস করতাম। এরই মাঝে ২০২০ সালের ২৪ জুন রাতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগের একটি ঘটনা সংগঠিত হয়। এ সংক্রান্ত ব্যাপারে ২৬ জুন-২০২০ইং তারিখে আমার পুত্র সেতু খান বাদী হয়ে অগ্নিকাণ্ডে জড়িত চান্দাইকোনা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মহির উদ্দিন সেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম সেখ ও ১নং সদস্য শরিফুল আলমসহ ১২জন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকে আাসামী করে অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগে আওয়ামীলীগের নেতাদের নাম থাকায় রায়গঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মামলাটি গ্রহণ না করে বিষয়টি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করেন। যার ডায়রি নং-১১৩৫। এদিকে আসামীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় সেই প্রভাবের কারণে সেসময়ে আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হই। পরবর্তীতে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর আমি বাদী হয়ে উল্লেখিত তিনজনসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে রায়গঞ্জ থানায় ওই অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং-২। (মামলাটিতে অগ্নিসংযোগের ভিডিওসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করা হয়।) অথচ মামলাটি দায়ের পর থেকেই অভিযুক্ত আসামী (চান্দাইকোনা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মহির উদ্দিন সেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম সেখ ও সদস্য শরিফুল আলমদের গ্রেপ্তারের জন্য একদিনও এলাকায় যায়নি পুলিশ। বরং ওসি আসাদুজ্জামান আসামীদের পক্ষ অবলম্বন করে মামলার বাদী হিসেবে আমাকে নানাভাবে হয়রানীসহ উপোহাসের দৃষ্টিতে কথা বলতেন। এমনকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আসামীদের লোকেশন তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) নজরুল ইসলাম ও থানার ওসি আসাদুজ্জামানকে একাধিকবার সরবরাহ করলেও তারা এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আসামীদের স্থান ত্যাগ করতে পরামর্শ দিতেন। শুধু তাই নয়, ওসি আসাদুজ্জামান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলামের সঙ্গে আসামীরা গভীর সখ্যতা গড়ে তুলে আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধামকি দিতেন। এমনকি মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আসামীরা রায়গঞ্জ থানার ওসি আসাদুজ্জামানের সঙ্গে কু-পরামর্শে সলঙ্গা থানা পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমার মামলার ১নং স্বাক্ষী মনসুর আলী খন্দকারকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে গত ২০.১১.২০২৪ইং তারিখে সলঙ্গা থানাধীন ভুইয়াগাঁতি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। একইভাবে আমার অগ্নিকাণ্ডের মামলার ৪নং সাক্ষী মনসুর আলী খন্দকারের স্ত্রী শিল্পী খাতুনকে ০৩.১২.২০২৪ইং তারিখে অপহরণ করেন অভিযুক্ত আসামীরা। এ সংক্রান্ত ব্যাপারে ০৬.১২.২০২৪ইং তারিখে রায়গঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রি করেন শিল্পী খাতুনের স্বামী মনসুর আলী খন্দকার। এরই মধ্যেই মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে অগ্নিসংযোগের মামলা থেকে চান্দাইকোনা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মহির উদ্দিন সেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম সেখ ও সদস্য শরিফুল আলমসহ ১২জন আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ১১.১২.২০২৪ইং তারিখে আদালতে চুড়ান্ত (ফাইনাল) প্রতিবেদন দাখিল করেন ওসি আসাদুজ্জামান। এতে আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়ে গত ১২.০৩.২০২৫ইং তারিখে উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) রাজশাহী বরাবর রায়গঞ্জের ওসি আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিলসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, মহাপুলিশ পরিদর্শক ও সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করি। এতে ওসি আসাদুজ্জামান আমার উপর ও আমার সাক্ষীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অপহৃতা শিল্পী খাতুনকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।
অপরদিকে অপহরণকারীদের মোবাইল ফোনে কথাপকথনের চারটি অডি রেকর্ড ওসি আসাদুজ্জামানকে সরবরাহ করেছি তবুও চার মাস অতিবাহিত হলেও অপহৃতা শিল্পী খাতুনকে উদ্ধারের জন্য তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। উপরোন্ত আমার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটির ন্যায় শিল্পী খাতুনের অপহরণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওসি আসাদুজ্জামান। এতে আমি ও আমার সাক্ষী অপহৃত শিল্পী খাতুনের পরিবার চরম উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় রয়েছি। সুতরাং আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশের আইজিপি,ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের নিকট ন্যায় বিচার প্রার্থনাসহ অপহৃত শিল্পী খাতুনকে উদ্ধার ও ওসি আসাদুজ্জামান এর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply