1. admin@dainikajker-bangladesh.com : ajkerbangladesh :
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ফুলপুরে প্রশাসনের আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন খুলনায় লাইসেন্স বিহীন চলছে অধিকাংশ করাত কল, প্রশাসন নিরব চুনারুঘাটে ঝুঁকিপূর্ণ বেলি সেতু পারাপারে ভোগান্তি আমরা এ সময়ের মুক্তিযোদ্ধাঃ জোসেফ গলাচিপায় ইলিশ মাছের জাল ফেলাকে কেন্দ্র করে মারধর, হাসপাতালে ভর্তি নওগাঁয় দ্বিতীয় বিয়ে করার পর স্বামী কতৃক নির্যাতনের শিকার প্রথম স্ত্রী মধুপুরে ট্রাকের পিছনে সিএনজির ধাক্কা সিএনজি চালক নিহত বেলকুচিতে ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপের অর্ধ-বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত চৌহালী যুবদলের সভাপতি ও (সাংগঠ:) নামে মিথ্যা ঘটনার প্রতিবাদ জানালো (ভার:) অধ্যক্ষ আনোয়ারুল মুসলিমদের পছন্দের শীর্ষে অশ্লীলতামুক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ‘আলফাফা’

বান্দরবানে ফোঁটা ফোঁটা চুঁইয়ে পড়া পানিতেই নির্ভরশীল ৩’শত পরিবার

  • প্রকাশিত : শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫
  • ২৮ বার পাঠ করা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বান্দরবানের জামছড়ি থাংক্রী পাড়ায় বসবাস তাঁর শৈনুচিং মারমা। বয়স চল্লিশ, মধ্য বয়সী এই গৃহিণী। প্রতি দিন পানির জন্য প্রায় ৫০০ ফুট উঁচু পাহাড়ি পথ বেয়ে থাংখ্রী ঝিড়ি থেকে পানি সংগ্রহ করেন। শুক্রবার ২১ মার্চ সকলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিড়ির পাথরের গর্ত থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে চুঁইয়ে পড়া পানিই একমাত্র ভরসা তাঁর। এক কলসি পানির জন্য দুই থেকে তিন ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়। শুধু সুপেয় পানি নয়, নিত্যব্যবহার্য পানিরও অভাব। বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলা জামছড়ি ইউনিয়নের থাংক্রী পাড়া। এ পাড়ায় মারমা জনগোষ্ঠীর ত্রিশ পরিবারের বসবাস। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শৈনুচিং মারমার মতো পানির সংকটে পড়েছেন পুরো পাড়ার মানুষ। শুধু এ পাড়ায় নয়, এ পাড়ার পাশে বুড়ি পাড়া, সাক্রেডং পাড়া, রোয়াজা পাড়াসহ পাঁচটি পাড়ার ৩ শো’র বেশি পরিবারে প্রায় দেড় হাজার মানুষ পানির সংকটে ভুগছেন। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় ঝিরি শুকিয়ে গেছে। রিঝির বিভিন্ন জায়গায় অল্প অল্প জমে থাকা পানি ও ঝিরির পাথরের গর্ত থেকে ফোঁটা ফোঁটা চুঁইয়ে পড়া পানি দিয়েই চলে এসব পাড়ার মানুষ। থাংক্রী পাড়ায় গিয়ে শৈনুচিং মারমা সাথে কথা হয়।

তিনি বলেন, সকালে পানি নিতে পারিনি, কারণ অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। দুপুরে জুমের কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে দেখি রান্নার পানি নেই। তাই এখন আসতে হয়েছে। এভাবে প্রতিদিন পানির জন্য কষ্ট করতে হয়। ওই পাড়ার চিং মেউ মারমা ও রেদামা মারমা বলেন, ঝিরির ক্ষুদ্র একটি উৎস থেকে বাঁশের ভাঙা খোল বসিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে চুঁইয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়। একটি কলসি ভরতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এক কলসি পানির জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। কেউ একবার পানি সংগ্রহ করার পর, আবার নতুন করে অপেক্ষার পালা শুরু হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মহিলাদের দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে। এই পানিতেই রান্না, গোসল ও গৃহস্থালির সব কাজ চালাতে হয় বলে জানায় তাঁরা। স্থানীয়রা জানান, পানির এই সংকট শুধু দৈনন্দিন কাজের সমস্যা নয়, এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিরও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গাছের শুকনো পাতাপঁচা, লালচে রঙের পাথরের ভাঁজে জমে থাকা দূষিত পানি ব্যবহার করায় নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। পাহাড়ি জনপদে সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘ দিনের। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে এখানকার মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।ওই পাড়ায় কয়েকজন প্রবীণ বাসিন্দার সাথে কথা বলে জানা যায়, ঝিরির আশেপাশে বনে গাছ না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে ঝিরিগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। ঝিরির আশেপাশের বনে সেগুন ও রাবার গাছ। এ গাছগুলো পানি ধরে রাখতে পারে না। তাই শুষ্ক মৌসুমে ঝিরি শুকিয়ে পানির সংকটে ভুগছে। জামছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যসিং শৈ মার্মা বলেন, তাঁর ইউনিয়নে পাঁচটি পাড়া পানির সংকটে ভুগছে। এসব পাড়া প্রায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ রয়েছেন। সবগুলো পাড়ায় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা না থাকায় মানুষকে অস্বাস্থ্যকর ও দূষিত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। পানি সংকটে থাকা গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরেসহ সরকারের কাছে আবেদন করছেন।

বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, সবুজেঘেরা বনাঞ্চলে পরিপূর্ণ বান্দরবান জেলায় একসময় সময় পানি সংকট ছিল না। কিন্তু বিগত বছরগুলোর তুলনায় বর্তমান সময়ে অধিকহারে বনাঞ্চল উজার করার কারণে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শুষ্কমৌসুম হলে পানির সংকটে পড়ে। তিনি আরও বলেন, বান্দরবানে অনেকগুলো পাড়া বন(বন সংরক্ষণ) রয়েছে। ওইসব পাহাড়ি পাড়ায় সারাবছর ঝিরি ঝর্ণায় পানি থাকে। সরকারি বা বেসরকারিভাবে বন সংরক্ষণ করতে পারলে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পানির সংকট অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জুলহাজ বলেন, ‘২০২২-২৫ অর্থ বছরে ৮ কোটি ৮ লাখ টাকায় জেলার ৭ উপজেলায় ৪৭২টি ডিপ টিউওয়েল ও ১১০টি রিংওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এখনো এরকম কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদটি শেয়ার করুন
© All rights reserved © 2025
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি