ইয়াহিয়া খান, চৌহালী সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের চৌহালীর এনায়েতপুরে যমুনা নদীর তীরে একটি রহস্যঘেরা পরিত্যক্ত টাগবোট ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। স্থানীয় স্পার বাঁধ থেকে প্রায় ৫০০ গজ দক্ষিণে অবস্থানরত নৌযানটি গত ২ মে ২০২৫ তারিখে সেখানে আনা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
নৌযানটির গায়ে লেখা নাম “এম. টি. আনোয়ারা নাসির-২”। এটি তিনতলা বিশিষ্ট একটি পুরনো টাগবোট, যা স্থানীয়দের ভাষায় “পল্টন জাহাজ” নামে পরিচিত। এর গঠন, আকৃতি ও শক্তিশালী ইঞ্জিনের কারণে এটি স্থানীয় কৌতূহলের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নৌযানটি বৈধ কোনো অনুমতি ছাড়াই আনা হয়েছে এবং এটি চুরি করে এখানে এনে ফেলা হয়েছে বলে তারা সন্দেহ করছেন। ভুয়াপুর থানার আলী আজগর নামের একজন ব্যক্তি টাগবোটটির মালিকানা দাবি করলেও, তিনি এখনো কোনো বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করেননি। আরও জানা যায়, তিনি প্রায় ১৩-১৪ জন মিস্ত্রি এবং লোহা কাটার যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে টাগবোটটির ওপরের অংশ কেটে দুটি নৌকায় বোঝাই করে লোহাজাতীয় মালামাল বিক্রি করে দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর ধারণা, এ টাগবোটটির মূল আকর্ষণ ছিল এর ইঞ্জিন। এতে রয়েছে মোট চারটি ইঞ্জিন — দুটি ছয় সিলিন্ডার ও দুটি চার সিলিন্ডারবিশিষ্ট শক্তিশালী ডিজেল ইঞ্জিন।
এ প্রসঙ্গে এনায়েতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান:
“আমি এই থানায় সদ্য যোগদান করেছি — ৮ মে ২০২৫ তারিখে রাতেই। এ ব্যাপারে এখনো কিছুই জানতাম না। তবে আপনি যেহেতু আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
এই মন্তব্য প্রশাসনের নজরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের আশা জাগিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন-এত বড় একটি টাগবোট কিভাবে প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া এনে কাটা শুরু হলো? এর প্রকৃত মালিক কে, এবং কীভাবে এটি নদীপথে এখানে পৌঁছল? স্থানীয়দের দাবি, এটি শুধুমাত্র অবৈধভাবে ধাতব অংশ বা ইঞ্জিন বিক্রির উদ্দেশ্যেই আনা হয়েছে।
তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply