আতিকুজ্জামান(শার্শা) যশোর : দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের পর স্থানীয় জনপদের বাসিন্দাদের দাবীর মুখে যশোর বেনাপোল মহাসড়কের মৃত, ঝড়ে উপড়ে থাকা গাছ এবং রাস্তার উপর ঝুলে থাকা ঝুকিপূর্ণ গাছের ডালপালা অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নাভারন পুরাতন বাজার এলাকা থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এই মহাসড়ক ব্যবহারকারী এবং এর দুইপাশে বসবাসকারী মানুষেরা। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল যশোর জেলা পরিষদ থেকে ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে এন-৭০৬ মহাসড়কের পাশে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে থাকা মৃত ও অর্ধমৃত গাছ অপসারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সেই চিঠিতে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তাও চাওয়া হয়। শার্শা উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণ হলেও ঝিকরগাছায় কার্যত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসন কিছুটা দেরি করে ফেলে। এরই মাঝে গত মঙ্গলবার রাতে নবীবনগর এলাকায় কোনো কারণ ছাড়াই একটি গাছের ডাল ভেঙে পড়ে প্রায় ১ ঘন্টা যশোর বেনাপোল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এই ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কতৃপক্ষের অবহেলা নিয়ে বিরুপ প্রচারণা শুরু হয়। সেদিনই প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, বুধবার (আজ) থেকেই ঝিকরগাছা অংশে গাছ কাটার কাজ শুরু করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় গাছ অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
যশোর বেনাপোল মহাসড়কের গাছ অপসারণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা ঝিকরগাছার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেবার সভাপতি মাস্টার আশরাফুজ্জামান বাবু বলেন, ২০১৭ সালেই এই গাছগুলো সরকার অপসারণ করে রাস্তাটি ৪লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু কিছু লোক এর বিরুদ্ধে আদালতে রীট করলে সিদ্ধান্ত ঝুলে যায়। এই গাছগুলোর জন্য অসংখ্য প্রাণহানি ঘটেছে, বহু সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। সীমিত পরিসরে হলেও ঝুকিপূর্ণ গাছ ও গাছের ডাল অপসারণ শুরু করায় তিনি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সকল গাছ অপসারণ করে অবিলম্বে রাস্তাটি ৬ লেনে উন্নীত করার দাবী জানান।
ভারত বাংলাদেশ যৌথ বানিজ্য কমিটির সাবেক পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, এই গাছগুলো মানুষের জান ও মালের জন্য হুমকি স্বরুপ। এগুলো অপসারণ করে রাস্তাটি ৬ লেনে উন্নীত করা জরুরী। গাছ অপসারণের কাজ শুরু হওয়ায় তিনি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভূপালী সরকার বলেন, এটি ছিলো একটা জটিল প্রক্রিয়া। সব কাজ শেষ করে অবশেষে আমরা কাজটি শুরু করতে পেরেছি।
যতদ্রুত সম্ভব সব ঝুকিপূর্ণ গাছের ডাল ও মৃত গাছ ও মাটিতে পড়ে থাকা গাছ অপসারণের কাজ শেষ করা হবে এবং গাছের অপসারিত অংশ ঐ জায়গাতেই প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে। এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। উল্লেখ্য, যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ততম জাতীয় রুট। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। অথচ, মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী গাছগুলোর একটি বড় অংশই মৃত, অর্ধমৃত কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply