বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের বিভিন্ন অপকর্মের কারণে ব্যাপক সমালোচিত ব্যক্তি মিজানুর রহমান আখন্দ। তার নিজস্ব কোন পরিচয় না থাকলেও বর্তমানে সে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বান্দরবান জেলা সমন্বয় কমিটির ‘যুগ্ম সমন্বয়কারী’। জুলাই আন্দোলনের সাথে কোথাও জড়িত না থাকলেও সে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে এনসিপিতে। রুপ পাল্টানোর ইতিহাস তার কাছে নতুন নয়। অতীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সাথে জড়িত থাকলেও তাকে বিভিন্ন অপকর্মের কারণে নাগরিক পরিষদ থেকে বাদ করে দেওয়া হয়েছে।

বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি স্বৈরাচারের পাতানো নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এটিএম শহিদুল ইসলামের হয়ে টাকার বিনিময়ে নির্বাচনী কাজ করেছে। সর্বশেষ জুলাই পরবর্তী বান্দরবান জেলা জামায়াতের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করলেও জামায়াত নেতারাও তাকে স্থান দেয়নি তার চারিত্রিক সমস্যার কারণে। সর্বশেষ বিভিন্নভাবে লবিং এর মাধ্যমে এনসিপি বান্দরবান জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী পদ ভাগিয়ে নিয়েছে।মিজানের নিজ বাড়ি সাতকানিয়ার খাগরিয়া এলাকায়। বান্দরবানে বসবাস করলেও নানা বিতর্কের কারণে জনসম্মুখে আসে না। এপর্যন্ত ৩টি বিয়ে করেছে সে। কোনোও স্ত্রীর ভরণপোষণও করে না।

তাছাড়া একাধিক নারী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত এই মিজান। তার ২য় স্ত্রী শাহিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, মিজানের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে ১৩ বছর হয়। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ যথোপযুক্ত প্রমাণ থাকার পরও সে আমাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করছে এবং আমার ভরণপোষণও করছে না। তাহলে সে কি আমার সাথে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবেই ছিলো?। তিনি আরও বলেন, মিজানকে আমি (স্ত্রী) আশা এনজিও সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নিজে জামিন হয়ে কিস্তিতে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে দিয়েছি। কিন্তু সে কিস্তির টাকা পরিশোধ না করায় আশা এনজিও আমার নামে মামলা দায়ের করেছে। মামলার ভার বহন করতে না পেরে আমি দুঃখ কষ্টে জীবনযাপন করছি।

তাছাড়া আমি মিজানকে বিভিন্নভাবে ব্যবসায়ীক ও রাজনৈতিক কাজ সহযোগিতা করেছি। কিন্তু এখন সে (মিজান) আমাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার, ভরণপোষণ বা দিয়ে আমার জীবনকে শেষ করে দিয়েছে। তার ২য় স্ত্রী শাহিনা আরো বলেন, মিজান আমাকে বিয়ে করার পরও বালাঘাটার রুপালী নামে এক মেয়ে এবং রহিম চৌধুরীর বাড়ির কাজের মেয়ে এক নওমুসলিমা নারীসহ অসংখ্য নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে তাদেরকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ভোগ করে ছেড়ে দিয়েছে। বান্দরবান জোন, ব্রিগেড, এসপি, ডিসি ও থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করলেও মিজান কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। আমি প্রশাসনের কাছে তার সমস্ত অপকর্মের বিচার, কিস্তির টাকা পরিশোধ এবং তার কাছ থেকে আমার জীবনের ক্ষতিপূরণ চাই।

কাজী নুরুল আনোয়ার নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, আমি মিজানের কাছ থেকে ৩,৫০,০০০/- (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা পাই। আমার কাছে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পসহ প্রমাণ রয়েছে। সে আমার ফোনও রিসিভ করছে না। আমার টাকা ফেরত এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আইনের দ্বারস্থ হবো। নারী কেলেঙ্কারি, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার পাশাপাশি ‘রাজনৈতিক বেশ্যা’ হিসেবে পরিচিত সে। পরিস্থিতি অনুযায়ী রুপ পাল্টে একের পর এক দল পরিবর্তন করেছে এই মিজান। তাছাড়া বান্দরবানের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গের নামে ফেসবুকে মিথ্যাচার করে সম্মানহানি করছেন প্রতিনিয়ত।

এখন বান্দরবানবাসীর প্রশ্ন, এতো অপকর্ম ও নানান অপরাধ জড়িত এবং স্বৈরাচারের পাতানো নির্বাচনে দালালি করাও পরও কিভাবে সে ‘এনসিপি’র জেলা কমিটিতে স্থান পায়? যা এনসিপির কমিটি এবং জুলাই বিপ্লবকে গুরুতর প্রশ্নবিদ্ধ করে? তার স্ত্রী ও ভুক্তভোগীসহ বান্দরবানবাসীর দাবি তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী পদক্ষেপ নিয়ে তার সমস্ত অপকর্মের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং তার স্ত্রীর জীবনের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। অন্যথায় বান্দরবানের ছাত্র-জনতা তাকে প্রতিহত করে বান্দরবান থেকে বিতাড়িত করবে।